ওয়ার্ডপ্রেস পরিচিতি – লেকচার ৪ – ওয়েবসাইটের ডিজাইন পরিবর্তন এবং প্লাগিন্স ইন্সটল
গত পর্বগুলোতে আমরা দেখলাম ওয়ার্ডপ্রেস কিভাবে সেটআপ দিতে হয়, আজকে আমরা শিখব ওয়ার্ডপ্রেস এর ডিজাইন চেঞ্জ এবং প্লাগিন্স ইন্সটল সম্পর্কে -
ওয়ার্ডপ্রেস থীম –
ওয়ার্ডপ্রেস ক্যান এত বিখ্যাত বলতে পারেন? শুধুমাত্র এর মেইন্টেইনেন্স সুবিধার জন্যই না, এর সবচেয়ে বড় কারন আপনি যখন ইচ্ছা তখন আপনার সমস্ত লেখা ঠিকঠাক রেখেই যেমন ইচ্ছা তেমন একটা ডিজাইন আপনি ওয়েবসাইটে লাগাইতে পারেন। কোডিং করে ওয়েবসাইট বানাইলে কি কি প্রবলেম হইতে পারে? ধরেন আপনি ১৫ দিন খেটে ম্যানুয়ালি কোড ইনপুট করে একটা ওয়েবসাইট বানাইলেন, সেইটার মধ্যে বিভিন্ন কনটেন্ট যোগ করলেন। এরপর দ্যাখা গেল ২ মাস পর আপনের অন্য একটা ডিজাইন পছন্দ, তখন তো আপনের পুরা কাজ আবার প্রথম থেকে শুরু করতে হবে। এইটা খুবই বিরক্তিকর ব্যাপার।
এখন আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস ইউজ করেন,
তাইলে এই বিরক্তি থেকে পুরা মুক্তি। আজকে একটা ডিজাইন পছন্দ, কালকে ওইটা ভাল লাগতেছে না; তো কি করবেন? থিম অপশনে যাবেন, নতুন থিম এর জন্য সার্চ দিবেন, যেইটা ভাল লাগবে সেইটাতে ইন্সটল বাটনে টিপ দিলেই আপনার পুরা ওয়েবসাইট এর ডিজাইন চেঞ্জ হয়ে যাবে, সাথে সাথে আপনার যে আগের লেখা, ছবি যা যা আছে তার সবই ঠিক জায়গাতেই থাকবে, কোন অদল বদল নাই।
আবার আপনার যদি ২ মাস পর মনে হয় “নাহ আগের ডিজাইনটাই তো ভালো ছিল”, তাইলেও কোন প্রবলেম নাই আপনি আগের থিম ইন্সটল করলেই আগের মত করে ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন।
কিভাবে থিম ইন্সটল করবেন, কিভাবে ডিজাইন চেঞ্জ করবেন তা জানতে দেখুন উপরের ভিডিও ক্লিপটি।
ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন্স –
এখন আপনে প্রশ্ন করতে পারেন ‘প্লাগিন্স জিনিসটা কি?’, উত্তর হইল – আপনে ওয়েবসাইট বানায়া কত সহজে সেইটা মেইন্টেইন করতে পারেন, কত সুন্দরভাবে আপনি সাজাইতে পারেন, সেইটাই আপনেরে করে দ্যায় প্লাগিন্স; আপনে যত প্রকার চিন্তা করতে পারেন যে আপনের ওয়েবসাইটে এইটা দরকার, ওইটা দরকার তার সবরকম সমাধান আপনে পাবেন প্লাগিন্সে। এক এক প্লাগিন্সের কাজ এক এক রকম। কোনটা ইউজ করা হয় ওয়েবসাইট খুব স্পিডি করতে, আবার কোনটা ব্যবহার করা হয় রঙ বেরঙ্গের কন্টাক্ট ফর্ম বানাইতে। ড্যাশবোর্ড থেকে যেভাবে থীম ইন্সটল করবেন ঠিক তেমনি ভাবেই প্লাগিন্সও ইন্সটল করতে হবে। ভিডিও ক্লিপসে পুরা জিনিসটাই খুব সহজে বুঝানোর ট্রাই করা হইছে। দেখে নিতে পারেন।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্লাগিন্স –
১. WordPress SEO by Yoast – এখনকার সময়ে যে কোন ওয়েবসাইটের জন্যই SEO খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস। SEO র জন্য মেটা ডাটা লাগে, মেটা ডেসক্রিপশন লাগে, কিওয়ার্ড লাগে; এই প্লাগিন্স ইউজ করলে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের এই সমস্ত ইনফরমেশন পাবেন এক ক্লিকেই
২. W3 Total Cache – এই প্লাগিন্সের কাজ হইল, আপনের ওয়েবসাইটের স্পীড বাড়ানো। ধরেন আপনে একটা ওয়েবসাইট সার্চ দিলেন, সেইটা ভালো কইরা খুলতে লাগে ৪০ সেকেন্ড, নিশ্চয়ই ততক্ষনে আপনে ওয়েবসাইট দ্যাখার আগ্রহই হারায় ফেলবেন। এই কারনে ওয়েবসাইটের স্পীড খুবই ইম্পরট্যান্ট। এই প্লাগিন্স দিয়ে মূলত ওয়েবসাইটের স্পীড বাড়ানোর কাজটাই করা হয়
৩. WP-DBManager – আপনি আজকে যে ওয়েবসাইট চালাইতেছেন, সেইটা কোন কারনে হ্যাক হইতেই পারে। বা ওয়েবসাইটের কোন প্রবলেম হইতেই পারে। সে ক্ষেত্রে কি আপনার আবার প্রথম থেকে সব বানানো লাগবে? মোটেও না, ইন্সটল করে নেন এই প্লাগিন্সটা, এইটা প্রতিদিন আপনার ওয়েবসাইটের অটোমেটিক ব্যাকআপ রাখবে, আর ব্যাকআপ ফাইলটাও অটোম্যাটিক শেয়ার করবে আপনার গুগল ড্রাইভে; এর মানে ওয়েবসাইট পুরা নষ্ট হইলেও প্রবলেম নাই, আপনার কাছে তো এক কপি থাকলোই
৪. Digg Digg – অনেকেই ব্লগ লেখেন, ব্লগ লেখার পরে একটা অপশন রাখতে চান যাতে সেই লেখাটা খুব সহজে ফেসবুক বা টুইটারে শেয়ার করা যায়, সেই জন্য এই আছে এই প্লাগিন্স। আপনি যদি আপনার সাইটে এই প্লাগিন্স ইন্সটল করে নেন তাহলে আপনার সমস্ত লেখার পর অটোম্যাটিক একটা অপশন আসবে শেয়ার করার জন্য। শুধু তাই না, আপনার লেখাটা কতবার শেয়ার হইছে সেইটাও জানায় দিবে এই প্লাগিন্স
৫. URL shortened – মাঝে মাঝেই দেখবেন, কিছু কিছু ওয়েব ঠিকানা থাকে বিরাট বড় বড়, এখন আপনি যদি একটা পোস্ট লেখেন আর সেইটার ওয়েব ঠিকানা বা URL যদি হয় এত্ত বড়, তাইলে সেইটা দেখতেও বাজে দ্যাখায়, আবার শেয়ারের জন্যও প্রবলেম। তাই এই প্রবলেম দূর করতে ইউজ করতে পারেন URL SHORTENED প্লাগিন্স। এই প্লাগিন্স ইউজ করলে আপনার সমস্ত URL কেটে ছোট হয়ে যাবে, যেইটা দেখতেও সুন্দর, শেয়ার করেও শান্তি। ধরেন আপনের URL যদি হয় – “http://free-bangladesh.blogspot.com/search/label/mp3” তাইলে এই প্লাগিন্স ইউজ করলে এই ঠিকানাটাই হয়ে যাবে “goo.gl/dc.ng” এই টাইপ।
তো আজকের জন্য এইটুকুই; পরের পর্ব আমাদের শেষ পর্ব। পরের পর্বে আমরা দেখব ওয়ার্ডপ্রেসের সিকিউরিটি এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু ব্যাপার।
0 মন্তব্য(গুলি):
Post a Comment