Bogra-বগুড়া

বগুড়া উত্তরবঙ্গের একটি শিল্প ও বাণিজ্যিক শহর। এটি রাজশাহী বিভাগ এর অন্তর্গত। বগুড়াকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বলা হয়। বগুড়া শহরের আয়তন ৭১.৫৬ বর্গকিলমিটার যা ২১ টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত । বগুড়া শহরে "শহীদ চান্দু" নামে একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম রয়েছে এছাড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (সরকারি) শহর থেকে সামান্য দুরেই অবস্থিত । বগুড়া দইয়ের জন্য খুব বিখ্যাত । বগুড়া শহরে থেকে ১১ কিঃমিঃ উত্তরে মহাস্থানগড় অবস্থিত, যা একসময় প্রাচীন বাংলার রাজধানী ছিল এবং সেসময় পুণ্ড্রনগর নামে পরিচিত ছিল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার এবং জেড ফোর্সের প্রধান মেজর জিয়াউর রহমান বগুড়ার জেলার গাবতলী উপজেলায় জন্মগ্রহন করেন।

পরিচ্ছেদসমূহ

  • ইতিহাস
  • ভৌগোলিক অবস্থান
  • যোগাযোগ ব্যবস্থা
  • উপজেলাসমূহ
  • প্রধান নদীসমূহ
  • অর্থনীতি
  • পর্যটন
  • সংস্কৃতি
  • শিক্ষা
  • ১০ প্রতিষ্ঠান সমূহ
  • ১১ উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
  • ১২ তথ্যসূত্র
  • ১৩ বহিঃসংযোগ

ইতিহাস

ইতিহাস থেকে জানা যায় বাংলার প্রাচীনতম একটি শহর বগুড়া। ভারতের রাজা "আশকা" বাংলা জয় করার পর এর নাম রাখেন পুণ্ড্রবর্ধন । ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বগুড়া ১১ নং সেক্টরের অধীনে ছিল ।

ভৌগোলিক অবস্থান

মহাস্থানগড়
বগুড়া শহর করতোয়া নদীর কোল ঘেঁষে অবস্থিত ।করতোয়া নদী উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে বগুড়াকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে । বগুড়ার উত্তরে গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট জেলা পশ্চিমে নওগাঁ জেলা, দক্ষিণে সিরাজগঞ্জ জেলা এবং পুর্বে যমুনা নদী ।

যোগাযোগ ব্যবস্থা

ট্রেন, বাস উভয় পথেই রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগ রয়েছে, এছাড়া শহরের অদূরে কাহালুতে রয়েছে একটি বিমানবন্দর ।

উপজেলাসমূহ

  1. বগুড়া সদর
  2. কাহালু
  3. শিবগঞ্জ
  4. গাবতলি
  5. সোনাতলা
  6. ধূনট
  7. আদমদীঘি
  8. দুপচাঁচিয়া
  9. নন্দীগ্রাম
  10. শাজাহানপুর
  11. সারিয়াকান্দি
  12. শেরপুর
  13. মিনি দুপচাঁচিয়া

প্রধান নদীসমূহ

  1. করতোয়া
  2. বাঙ্গালী
  3. যমুনা
  4. নাগর

অর্থনীতি

সাম্প্রতিক বছর গুলোতে বগুড়া শহরের অবকাঠামোগত প্রচুর উন্নতি সাধিত হয়েছে । নতুন শহর পরিকল্পনার মাধ্যমে রাস্তাগুলো পুননির্মান এবং দু লেনে উন্নিতকরণ করা হয়েছে । এখানকার মাটি বেশ উর্বর এবং এখানে প্রচুর শস্যের উৎপাদন হয় । বিগত কয়েক বছরে বগুড়ায় লাল মরিচের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে যা কিনা ১০০ কোটি টাকার ব্যাবসায় পরিণত হয়েছে । ব্যাবসা- বাণিজ্যের উন্নতির সাথে সাথে এখানকার ব্যাংকিং ব্যাবস্থাপনাতেও এসেছে নতুন মাত্রা । সরকারি বেসরকারি প্রায় সব ব্যাংকের একটি করে শাখা রয়েছে এখানে । ২৪ ঘন্টাই শহরের যে কোনো প্রান্তে এটিএম বুথ খোলা পাওয়া যায় । ২০০৮ সালে ফ্রান্সের একটি ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান ড্যানোন গ্রুপ গ্রামীণ গ্রুপের সাথে যৌথভাবে শক্তিদই তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে ।

পর্যটন

পর্যটনের জন্য রয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক ভাবে বিখ্যাত "মহাস্থানগড়" যা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ সবার কাছেই পবিত্র একটি স্থান । এছাড়াও আছে বেহুলা লক্ষ্মীন্দরের বাসর ঘর, গোকুল মেঢ়, ভাসু বিহার, যোগীর ভবণ,‍‍‌ বিহার, ভিমের জঙ্গল, খেরুয়া মসজিদ, শেরপুর । বগুড়া শহরে রয়েছে "নওয়াব প্যালেস" যা ব্রিটিশ আমলে "নীলকুঠী" নামে পরিচিত ছিল । এখানে থাকার জন্য রয়েছে চার তারকা বিশিষ্ট হোটেল "নাজ গার্ডেন" ।

সংস্কৃতি

সুফি, মারাঠি, লালন ইত্যাদি নিয়ে বগুড়ার সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ। বগুড়া থেকে প্রকাশিত কয়েকটি আঞ্চলিক পত্রিকার মধ্যে আছে দৈনিক করতোয়া, দৈনিক বগুড়া, দৈনিক চাঁদনিবাজার, দৈনিক উত্তরাঞ্চল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

শিক্ষা

পড়াশুনার জন্য শহরের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে "বগুড়া জিলা স্কুল", যা ১৮৫৩ সালে স্থাপিত । নারী শিক্ষার জন্য রয়েছে "সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়" যা "ভিক্টোরিয়া মেমরিয়ালস গার্লস স্কুল" নামেও পরিচিত। এছাড়া রয়েছে "ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ"। ইংরেজি ভার্সনে শিক্ষার জন্য রয়েছে "মিলেনিয়াম স্কলাস্টিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ" ও "বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ" যার প্রধান শাখা ঢাকায় । এছাড়া ব্রিটিশ কারিকুলামে শিক্ষার জন্য রয়েছে "ইন্টারন্যাশনাল টার্কিশ হোপ স্কুল", "এডভেন্টিস্ট ইন্টারন্যাশনাল" ও "নর্থ গার্ডেন" । জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত "সরকারি আজিজুল হক কলেজ" বেশ সুপরিচিত । এছাড়া আছে "সরকারি শাহ সুলতান কলেজ", মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ । কারিগরি শিক্ষার জন্য রয়েছে বগুড়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট।
চিকিৎসার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধাসম্পন্ন "শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল", প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৯২ । এছাড়াও আছে সরকারি নার্সিং কলেজ, মেডিকাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল, একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ।

প্রতিষ্ঠান সমূহ

বগুড়ার অর্থনীতিকে সচল রাখতে এখানে রয়েছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। এখানে রয়েছে আকবরিয়ার মতো প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী কনফেকশনারী। ভোজন রসিকদের জন্য আছে শ্যামলী, কোয়ালিটি, এশিয়ার মতো খ্যাতিমান রেস্তোরা। থাই,চাইনিজ বা বিদেশী খাবারের জন্য আছে নাজ গার্ডেন(৪ তারকা বিশিষ্ট), সিয়েস্টা, সেফওয়ে, নর্থওয়ে, রেড চিলি-র মতো অভিজাত হোটেল। ব্যাগ, লোহার জিনিস-পত্র তৈরী হয় এমন প্রতিষ্ঠানও রয়েছে এ শহরে। স্থানীয়ভাবে এখানে জুতো তৈরীতে বেশ খ্যাতি রয়েছে আমির এন্ড সন্স, সজল, পায়ে পায়ে ইত্যাদি। শহরের বিসিকে রয়েছে বেশ কিছু শিল্প কারখানা। এর মধ্যে সাবান তৈরীর কারখানা অন্যতম।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব

  • প্রফুল্ল চাকী (১৮৮৮-১৯০৮), ব্রিটিশ বিরোধী আন্দলনের নেতা ।
  • মোহাম্মদ আলী বগুড়া (মৃত্যু ১৯৬৯), কূটনীতিক এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ।
  • মেজর জিয়াউর রহমান (১৯৩৬-১৯৮১) বীর উত্তম, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার এবং জেড ফোর্সের প্রধান, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ।
  • খাদেমুল বাশার (১৯৩৫-১৯৭৬), বীর উত্তম, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার এবং বিমান বাহিনী প্রধান ।
  • খানবাহাদুর ইব্রাহিম প্রতিষ্ঠাতা, বগুড়া সমবায় ব্যাংক ,সোনাতলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ।
  • আখতারুজ্জমান ইলিয়াস (১৯৪৩-১৯৯৭), সাহিত্যিক ও গল্পকার ।
  • গাজীউল হক (১৯২৯-২০০৯), ভাষা সৈনিক ।
  • এম. আর. আখতার মুকুল (১৯২৯-২০০৪), লেখক এবং সাংবাদিক ।
  • মুশফিকুর রহিম জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় ।
  • রোমেনা আফাজ সাহিত্যিক ।
  • আবু সাইদ চলচিত্র নির্মাতা ।
  • তারেক জিয়া
  • এনামুল হক

0 মন্তব্য(গুলি):