ব্লগার বনাম ওয়ার্ডপ্রেস : কোনটি ব্যবহার করবেন

ব্লগার বনাম ওয়ার্ডপ্রেস : কোনটি ব্যবহার করবেন 

 

ব্লগার এবং ওয়ার্ডপ্রেস, ব্লগারদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় দুটি ব্যবস্থা। দুটিতেই বিনামুল্যে ব্লগ তৈরী করা যায়। অর্থাত তাদের সাইটে গিয়ে ফরম পুরন করলেই চলে, সাথেসাথে একটি ব্লগের মালিক হবেন। ডোমেন কিংবা হোষ্টিং এর খরচ নেই। নিজস্ব ডোমেন থেকে পার্থক্য এটুকুই, আপনার সাইটের নামের সাথে blogspot অথবা wordpress লেখা থাকবে। কিন্তু তাতেই বা কি আসে যায়! ওয়েবসাইটে মুলত ভিজিটর আসে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে, সার্চের মাধ্যমে। তারা ওয়েব এড্রেস নিয়ে মাথা ঘামায় না।
দুটি সফটঅয়্যারের রয়েছে নিজস্ব সুবিধা এবং অসুবিধা। আপনার জন্য কোনটি উপযোগি তা ঠিক করার জন্য সেগুলি জানা গুরুত্বপুর্ন। দুটি সফটঅয়্যারের সুবিধে এবং অসুবিধেগুলি দেখা যাক।

ওয়ার্ডপ্রেসের সুবিধে
.          ওয়ার্ডপ্রেস অত্যন্ত শক্তিশালি সিএমএস সফটঅয়্যার। নিউ ইয়র্ক টাইমসের মত অনলাইন পত্রিকা এই সফটঅয়্যার ব্যবহার করে। কাজেই সাধারন ব্লগই হোক আর জটিল কেনাকাটার সাইটই হোক, এখানে সবই করা যায়।
.          বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে ব্লগের তথ্য পাঠানোর জন্য কিছুই করতে হয় না। ওয়ার্ডপ্রেস নিজেই এই কাজ করে দেয়।
.          ব্যবহারের জন্য রয়েছে অনেকগুলি থিম। আপনার পছন্দমত থিম সিলেক্ট করুন এবং ইচ্ছেমত উইজেট সিলেক্ট করুন। যাকিছু প্রয়োজন সবই পাওয়া যাবে।
.          আপনি বিনামুল্যে ৩ গিগাবাইট যায়গা পাবেন। সাধারনভাবে এই যায়গা যথেষ্ট। প্রয়োজনে টাকা দিয়ে এই যায়গা বাড়ানো যায়।
.          যে কোনসময় নিজস্ব সার্ভারে ট্রান্সফার করতে পারেন। অথবা তাদের টাকা দিয়ে সেখানেও নিজস্ব হোষ্টিং এর সুবিধে পেতে পারেন।

ওয়ার্ডপ্রেসের সীমাবদ্ধতা
.          বিনামুল্যের হোষ্টিং ব্যবহার করলে টেক্সট, ইমেজ, পাওয়ার পয়েন্ট, পিডিএফ ইত্যাদি কয়েকটি ফরম্যাটের বাইরে অন্য ফরম্যাট ব্যবহার করা যায় না। করতে চাইলে টাকা দিতে হয়।
.          তাদের নিজস্ব থিম ব্যবহার করতে হয়।
.           এইচটিএমএল এডিট করা যায় না, ফলে ওয়েব পেজে কোন পরিবর্তন করা যায় না। অর্থ দিয়ে ফন্ট জাতিয় কিছু পরিবর্তনের সুযোগ পাওয়া যায়।
.          এডসেন্স, বিজ্ঞাপন ইত্যাদি ব্যবহার করা যায় না, ফলে সাইট ব্যবহার করে আয় করার সুযোগ নেই।

ব্লগারের সুবিধে
.          ব্লগার ব্যবহার সহজ। রেজিষ্টার করার সাথেসাথেই ব্যবহার করা যায়।
.          তাদের নিজস্ব থিমের বাইরে যেকোন থিম ব্যবহার করা যায়।
.          ইএচটিএমএল এডিট করা যায়। ফলে সাইটে যেকোনধরনের পরিবর্তন করা যায়।
.          এডসেন্স, বিজ্ঞাপন ইত্যাদি ব্যবহার করে আয় করা যায়।
.          ছবি, ভিডিও ইত্যাদি সবকিছুই ব্যবহার করা যায়।
.          যায়গার সীমাবদ্ধতা নেই। যতটা প্রয়োজন ততটাই ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

ব্লগারের সীমাবদ্ধতা
.          সফটঅয়্যার ডাউনলোড করে ওয়ার্ডপ্রেসের মত ব্যবহার করা যায় না। নিজস্ব ডোমেন ব্যবহার করলেও তাদের মাধ্যমে করতে হয়।
.          কোড পরিবর্তনের সুযোগ থাকলেও গুগলের ফর্মূলার সাথে না মেলায় কোড মুছে দেয়ার কুখ্যাতি রয়েছে।
.          নিজে থেকে সার্চ ইঞ্জিনে তথ্য যায় না। অবশ্য সার্চ ইঞ্জিনের স্পাইডার নিজে সাইট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের যে কাজ করে তাতে তথ্য সার্চ ইঞ্জিনে যায়।

ব্লগার নাকি ওয়ার্ডপ্রেস, কোনটি ব্যবহার করবেন বিষয়টি আপনার কাজের ধরনের ওপর নির্ভর করে। যদি নিজস্ব ডোমেন/হোষ্টিং ব্যবহার করেন তাহলে ওয়ার্ডপ্রেস থেকে বেশি সুবিধে পাওয়া যাবে। আয়ের চিন্তা না করে যদি ব্লগিং মুলকথা হয় তাহলেও ওয়ার্ডপ্রেস খুব ভাল যায়গা।
আর ডোমেন রেজিষ্ট্রেশন/হোষ্টিং ইত্যাদি বিষয়কে এড়িয়ে বিনামুল্যে ওয়েবসাইট তৈরী এবং সেখান থেকে আয় করার জন্য ব্লগার বেশি উপযোগি।

0 মন্তব্য(গুলি):