অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং এবং স্থানীয় ফ্রিল্যান্সিং এর ভাল-মন্দ

অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং এবং স্থানীয় ফ্রিল্যান্সিং এর ভাল-মন্দ

বাংলা টিউটর সাইটে মুলত অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে লেখা হয়। ফ্রিল্যান্সিং এর ভাল দিক, মন্দ দিক, কিভাবে ভাল করা যায় ইত্যাদি। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার জন্য পুরোপুরি ইন্টারনেটের কাজের ওপর নির্ভর করতে হবে এমন কথা নেই। স্থানীয়ভাবে ফ্রিল্যান্সিং কাজে বেশকিছু সুবিধে রয়েছে। কাজটি প্রচলিত হলেও ফ্রিল্যান্সিং শব্দটি ব্যবহার করা হয় না সেকারনে অনেকের কাছে ভিন্ন শোনাতে পারে।
যারা গ্রাফিক ডিজাইনার, এনিমেটর, গ্রোগ্রামার বা লেখক তারা চাকরী করলেও তার বাইরে কারো কাজ করে অর্থ নেন। এটা ফ্রিল্যান্সিং। কেউ কেউ চাকরীর বদলে এভাবেই চলতে পছন্দ করেন। একেই স্থানীয় ফ্রিল্যান্সিং বিবেচনা করা হচ্ছে। এরসাথে অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কাজের তুলনামুলক আলোচনা করা হচ্ছে এখানে।


স্থানীয় ফ্রিল্যান্সিং এর ভাল দিক
.          স্থানীয়ভাবে কাজ করার প্রধান সুবিধে হচ্ছে যার কাজ করছেন তিনি একই সমাজের ব্যক্তি। ফলে তাকে বোঝা সহজ। কাজের ধরনও স্থানীয়। ফলে তুলনামুলক কম জেনেও কাজ করা সম্ভব।
.          স্থানীয় কাজ মোটামুটি একই ধরনের হয়ে থাকে। ফলে অন্যেরা কি করছে সেটা দেখে দ্রুত দক্ষতা বাড়ানো যায়। বিশেষ কিছু বিষয়ে দক্ষতা বাড়ানোই যথেষ্ট।
.          স্থানীয় ট্রেনিং সেন্টার গুলি স্থানীয় কাজের উপযোগি ট্রেনিং দেয়। ফলে কাজ জানা না থাকলেও শিখে নেয়ার সুযোগ থাকে।
.          বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ পাওয়া যায় স্থানীয়ভাবে কাজ করে। ক্লায়েন্টে কাজ সময়মত করে দেয়ার দায়িত্ববোধ থেকে শুরু করে কাজের নানাদিক নিয়ে পরীক্ষা করার সুযোগ থাকে। বিপরীতভাবে অনলাইনে কাজ করার সময় পরীক্ষা করার কোন সুযোগ নেই। তারা আশা করেন আপনি দক্ষতালাভ করেই কাজে হাত দিয়েছেন।

স্থানীয় ফ্রিল্যান্সিং এর মন্দ দিক
.          যোগাযোগ করা এবং কাজ সংগ্রহ করা কঠিন। ইন্টারনেটে কাজ খোজার জন্য কাজের একটি সাইটে যাওয়াই যথেষ্ট। কিন্তু স্থানীয়ভাবে কারো কাছ থেকে কাজ পাওয়ার জন্য নিয়মিত তারসাথে যোগাযোগ রাখতে হয়, কাজের খোজ রাখতে হয়, যাতায়াতে প্রচুর সময় ব্যয় করতে হয়। এরপরও অনেক সময় ব্যক্তিগত সম্পর্ককে কাজের দক্ষতার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়।
.          স্থানীয় ফ্রিল্যান্সিং কাজে মজুরী কম। অনলাইনে কাজের সময় মজুরী হিসেব করা হয় ডলারে এবং সেটা উন্নত সমাজের মজুরীর সাথে মিল রেখে। তুলনা করে বলা যায়, অনলাইনে একটি লোগো ডিজাইন করে আপনি অনায়াসে ১০০ থেকে ৫০০ ডলার আয় করতে পারেন, বাংলাদেশে একই কাজের জন্য এই পরিমান অর্থ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
.          প্রতিযোগিতা অত্যন্ত বেশি। প্রত্যেকেই নির্দিষ্ট কোন যায়গায় কাজ করিয়ে নিতে অভ্যস্থ। তার কাছ থেকে কাজ নেয়ার কাজ কঠিন। এমনকি একজন গ্রাফিক ডিজাইনারকে নিলক্ষেতের ডিজাইনারদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হয়।
.          স্থানীয়ভাবে কাজে নতুন কিছু করার সুযোগ নেই। প্রতিটি সমাজেই নির্দিস্ট একটি গন্ডির মধ্যে কাজ করা হয়। ক্লায়েন্টের মানষিকতা সেভাবেই পরিচালিত হয়। আপনাকেও তারসাথে মিল রেখে কাজ করে যেতে হয়।

আপনি কোন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং পছন্দ করবেন
আপনি কোন একটিকে বেশি পছন্দ করতেই পারেন। বিষয়টি অনেকটাই ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে। যদি স্থানীয়ভাবে নিয়মিত কাজ পাওয়া যায় এবং চলনসই আয় হয় তাহলে সেটা করতে আপত্তি নেই। কাজেই যোগাযোগ ভাল থাকলে স্থানীয় কাজ পছন্দ করতে পারেন। আর এদিকে খুব ভাল করার সুযোগ না থাকলে অনলাইনে কাজকে বেশি গুরুত্ব দিতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সার ফ্রিল্যান্সারই। দুধরনের কাজের পথ খোলা রাখাই ভাল। বরং কোন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং পছন্দ করবেন তার উত্তরে এককথায় বলা যেতে পারে, স্থানীয়ভাবে কাজ করে দক্ষতা বাড়ান এরপর অনলাইনের কাজের দিকে চেষ্টা করুন।

0 মন্তব্য(গুলি):