নাটোরের দর্শনীয় স্থান- Natore, Bangladesh Tour

নাটোরের দর্শনীয় স্থান
চলনবিল
নাটোর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার সাতটি উপজেলা নিয়ে প্রায় ৮০০ বর্গ মাইল এলাকাব্যাপী চলনবিল অবস্থিত। বিলের পানি চলমান বলেই নাম চলনবিল। এর মতো বড় বিল দেশে আর নেই। আত্রাই, বড়াল,নন্দকুঁজা, গুমানী, করতোয়া, ভদ্রাবতী, বেশানী, গুড় প্রভৃতি নদী বিলে পানি জোগান দেয়। শহরের পুরনো বাস টার্মিনাল থেকে বাসে সিংড়া পর্যন্ত যেতে ভাড়া লাগে ১৫ টাকা। এরপর ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ঘণ্টাচুক্তিতে বিলে বেড়ানো যায়।
চলনবিল জাদুঘর
জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর গ্রামে আছে চলনবিল জাদুঘর। স্থানীয় শিক্ষক আব্দুল হামিদ ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় নিজ বাড়িতে ১৯৭৮ সালে গড়ে তুলেছেন বিচিত্র এ জাদুঘর। চলনবিলে প্রাপ্ত নানান নিদর্শন, মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম ছাড়াও এখানে আছে অনেক দুর্লভ সংগ্রহ। নাটোর থেকে বাসে গুরুদাসপুর উপজেলায় এসে সেখান থেকে নদী পার হয়ে রিকশায় আসা যাবে খুবজিপুর গ্রামের এ জাদুঘরারে। শনিবার জাদুঘরটি বন্ধ থাকে।
হাইতি বিল
জেলা শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে নলডাঙ্গা উপজেলায় আছে হাইতি বিল। প্রায় ৪৫০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ বিলটি দেশের সবচেয়ে গভীর বিল। প্রায় বারো মিটার গভীর এ বিলে সারা বছরই পানি থাকে। তবে বর্ষায় পানির পরিমাণ বেড়ে যায় অনেক বেশি।
নাটোর রাজবাড়ি
শহরের উত্তরে ১৮০ বিঘা জমির ওপর বাড়িটি। বৃহৎ দুটি জলাশয় বাড়িটিকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে। রাজবাড়িতে প্রবেশপথ মাত্র একটি। প্রবেশপথের দুধারে ছিল প্রহরীদের ব্যারাক। ব্যারাক পেরোনোর পরই ছোট তরফের প্রাসাদ, ডানে অল্প দূরে বড় তরফের প্রাসাদ। ভেতরে রয়েছে রানী ভবানীর প্রাসাদ ও মন্দির। রাজকর্মচারীদের বাসস্থানটিও টিকে আছে। ১৯৮৫ সালে রাজবাড়ির বাগানের অংশ সংস্কার করে বানানো হয়েছে রানী ভবানী যুব পার্ক। শহরের ঢাকা বাসস্ট্যান্ড থেকে রাজবাড়ি যেতে রিকশায় ভাড়া লাগে ১০-১৫ টাকা।
উত্তরা গণভবন
প্রবেশদ্বারে আছে কলকাতায় তৈরি লন্ডনের কোক অ্যান্ড টেলভি কম্পানির একটি ঘড়ি। শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ৪১.৫১ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত নাটোরের দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি যা এখন উত্তরা গণভবন। লেক ঘেরা ১২টি ভবন নিয়ে এ বাড়ি। বাড়ির বাগানে ইতালি থেকে আনা ভাস্কর্য। অনেক দুর্লভ গাছও আছে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, নাটোর রাজার নায়েব দয়ারাম রায় ১৭১৪ সালে দিঘাপতিয়ায় জমিদার বাড়ি নির্মাণ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিঘাপতিয়া রাজবাড়িকে উত্তরা গণভবন ঘোষণা করেন। শহরের ঢাকা বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশায় ভাড়া লাগে ২০-২৫ টাকা।
এখানে রয়েছে রানী ভবানীর বাড়ি, দীঘাপাতিয়া রাজবাড়ি যা উত্তরা গণভবন নামেও পরিচিত। সুদৃশ্য একটি বাগানের পাশাপাশি রয়েছে দোলমঞ্চ,সিংহদালান, মন্দির ও অট্টালিকা, ঠাকুরবাড়ি কাব,দাতব্য চিকিৎসালয়, পাওয়ার হাউস ইত্যাদি। এছাড়াও উনিশ শতকে নির্মিত কোতোয়ালি দরগা,বুড়ামাদারের দরগা, গাড়িখানা দরগা, ময়দাপট্টি দরগা, কানাইখালী দরগা।
অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
দয়ারামপুর রাজবাড়ি, লালপুরের বুধপাড়া কালীমন্দির
বিখ্যাত খাবারের নাম নাটোরের কাচাগোল্লা
নদী সমূহ আত্রাই, বড়াল, নারদ, নন্দকুঁজা ইত্যাদি
কীভাবে যাবেন : ঢাকা ও চট্টগ্রাম সড়কপথে নাটোর যাওয়া যায়। উলেখযোগ্য পরিবহনগুলো হচ্ছে হানিফ,মডার্ন, এনপি এলিগ্যান্স, ন্যাশনাল ট্রাভেলস ইত্যাদি।
কোথায় থাকবেন : থাকার জন্য রয়েছে বেশকিছু মাঝারি মানের হোটেলÑ রাজবিহারী বোর্ডিং, রাজ বোর্ডিং, নাটোর বোর্ডিং, ক্রিসেন্ট বোর্ডিং ইত্যাদি।

0 মন্তব্য(গুলি):