নওগাঁর দর্শনীয় স্থান
এখানে দেখতে পাবেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য পতিসর, ১৯২৩ সালে আবিষ্কৃত পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, গদ্দল মহাবিহার, পতœীতলায় অবস্থিত দিব্যক স্মৃতিস্তম্ভ, নসরত শাহ নির্মিত কুশুম্বা মসজিদ। এছাড়াও রয়েছে করোনেশন থিয়েটার,অনিমেষ লাহিড়ীর বাড়ি, পালবংশের স্মৃতি বহনকারী সাঁওতালপাড়া।
পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার: নওগাঁ থেকে ৩২ কিলো মিটার উত্তরে বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার। এর আদি নাম সোমপুর বিহার। ইতিহাসবিদদের মতে, পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা ধর্মপাল অষ্টম শতকের শেষের দিকে এ বিহার নির্মাণ করেছিলেন। বিহারের আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৯শ ২২ ফুট ও পূর্ব-পশ্চিমে ৯শ ১৯ ফুট। সমগ্র পৃথিবীতে এ পর্যন্ত জ্যামিতিক নকশার যতগুলো পুরাকীর্তির সন্ধান পাওয়া গেছে বিশেষজ্ঞদের মতে পাহাড়পুর তার মধ্যে অন্যতম সেরা। কারো কারো মতে এখানে একটি জৈন মন্দির ছিল। আর সেই মন্দিরের উপরেই গড়ে তোলা হয়েছে এ বিহার। এ বিহারে মোট ১৭৭টি ঘর রয়েছে। ঘরগুলোতে বৌদ্ধভিক্ষুরা বাস করতেন। বিহারের ঠিক মাঝখানে রয়েছে একটি মন্দির। মন্দিরটি দৈর্ঘ্যে ৪শ ফুট, প্রস্থে প্রায় ৩শ ৫০ ফুট ও উচ্চতায় ৭০ ফুট। কালের বিবর্তনে মন্দিরের সবচেয়ে উপরের অংশ ধসে গেছে। বাইরের দেয়ালে বুদ্ধমূর্তি, হিন্দুদের দেবী মূর্তি ও প্রচুর পোড়ামাটির ফলকচিত্র রয়েছে।
এসব চিত্রে সাধারণ মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবনগাথা চিত্রিত হয়েছে। বিহারের মূল বেষ্টনীর দেয়াল প্রায় ২০ ফুট চওড়া। বেষ্টনীর মধ্যে রয়েছে আরেকটি মন্দির। এটি মূল মন্দিরের ধ্বংস স্তূপ বলে ধারণা করা হয়। এ ছাড়াও এ বিহারের চারিপাশে আরো অনেক স্থাপত্যের নিদর্শন পরিলক্ষিত হয়। বিহারের কাছেই রয়েছে ইট ও পাথর দিয়ে বাঁধানো একটি ঘাট। এ ঘাটের পাশ দিয়ে এক সময় একটি নদী ছিল। এ ঘাট নিয়ে এলাকায় অনেক জনশ্রুতি রয়েছে। এ ঘাটে মইদল রাজার কন্যা সন্ধ্যাবতী স্নান করতো বলে এ ঘাটের নাম ছিল সন্ধ্যাবতীর ঘাট। নরওয়ে সরকারের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে ১৯৯৩ সালে এখানে একটি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়। এ জাদুঘরে খলিফা হারুন অর রশিদের শাসনামলের রুপার মুদ্রাসহ বিভিন্ন সময়ের প্রাচীন মুদ্রা, কয়েক হাজার পোড়ামাটির ফলকচিত্র, পাথরের মুর্তি, তাম্রলিপি, শিলালিপি ইত্যাদি স্থান পেয়েছে। বিহারের চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
নওগাঁ থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা: নওগাঁ থেকে বাসে ও অটোরিকশা রিজাভ করে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে যাওয়া যায়। বাসে জনপ্রতি ভাড়া ৩০ টাকা। নওগাঁ শহর থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা রিজাভ নিলে ভাড়া নেবে ৫শ টাকা। এতে ৫ জন যাওয়া যায়।
পতিসর কুঠিবাড়ী: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত পতিসর কুঠি বাড়ী। নওগাঁ শহর থেকে প্রায় ৩৬ কিলোমিটার দক্ষিণে আত্রাই উপজেলার নাগর নদের তীরে পতিসর কুঠিবাড়ী অবস্থিত। পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত কালিগ্রাম পরগনার জমিদারী দেখাশোনার জন্য কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৯১ সালে সর্বপ্রথম পতিসরে আসেন। জমিদারী দেখা-শোনার জন্য এলেও প্রকৃতি ও মানব প্রেমী কবি অবহেলিত পতিসর এলাকার মানুষের জন্য দাতব্য চিকিত্সালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠাসহ অনেক জনহিতৈষী কাজ করেন। এখানকার কৃষকের কল্যাণে নোবেল পুরস্কারের ১ লাখ ৮ হাজার টাকা দিয়ে তিনি এখানে একটি কৃষি ব্যাংক স্থাপন করেন। কবির সাহিত্য সৃষ্টির একটি বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে পতিসর। পতিসরে বসেই কবি চিত্রা, পূর্ণিমা, সন্ধ্যা,গোরা, ঘরে-বাইরেসহ অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেন। রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বুকে নিয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে পতিসর কুঠিবাড়ী।
নওগাঁ থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা: নওগাঁ থেকে সরাসরি পতিসরে বাস যায় না। আত্রাই অথবা রানীনগরে বাস থেকে নেমে অটোরিকশা অথবা রিকশা-ভ্যানযোগে পতিসর যাওয়া যায়। শহর থেকে মাইক্রোবাস অথবা অটোরিকশা রিজার্ভ নিয়েও প্রতিসর ঘুরে আসা যায়।
ঐতিহাসিক কুশুম্বা মসজিদ: সাড়ে চারশ বছরের ঐতিহ্য ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক কুশুম্বা মসজিদ। নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলা সদর থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণে নওগাঁ রাজশাহী মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত কুশুম্বা গ্রাম। এ গ্রামের বিশাল আকৃতির দীঘির পশ্চিম পাড়ে ধুসর বর্ণের ঐতিহাসিক কুশুম্বা মসজিদ অবস্থিত। বাংলায় নিযুক্ত আফগান শাসক গিয়াস উদ্দীন বাহাদুর শাহেব আমলে জনৈক সোলায়মান ১৫৫৮ খিস্টাব্দে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন।
মসজিদের চার কোণায় রয়েছে ৪টি মিনার,মিনারগুলো মসজিদের দেয়াল পর্যন্ত উঁচু ও আট কোণ বিশিষ্ট। ছাদের উপর রয়েছে মোট ৬টি গম্বুজ। মসজিদের উত্তর দিকের মেহরাবের সামনে পাথরের পিলারের ওপর তৈরি করা হয়েছিল একটি দোতলা ঘর। এই ঘরটিকে বলা হতো জেনান গ্যালারী বা মহিলাদের নামাজের ঘর। মসজিদের ভেতরে পশ্চিমের দেয়ালে রয়েছে ৩টি চমত্কার মেহরাবের ওপর ঝুলন্ত শিকল, ফুল ও লতা পাতার কারুকার্য। মসজিদের সম্মুখ ভাগে রয়েছে খোলা প্রাঙ্গণ ও পাথর বসানো সিঁড়ি যা দীঘিতে গিয়ে নেমেছে। বাংলাদেশের ৫ টাকা নোটে এ মসজিদটির ছবি রয়েছে। নওগাঁ থেকে সরাসরি রাজশাহীগামী বাসে কুশুম্বা মসজিদে যাওয়া যায়। জনপ্রতি ভাড়া নেবে ৩০ টাকা।
দিবর দীঘি: নওগাঁ জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিঃ মিটার ও পত্নীতলা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিঃ মিটার পশ্চিমে সাপাহার-পত্নীতলা সড়কের পাশে হাজার বছরের প্রাচীন এ দীঘিটি অবস্থিত। বৃহত্ এ দীঘি ও দীঘির চারপাশের সবুজ বৃক্ষরাজি মুগ্ধ করবে আপনাকে। নওগাঁ থেকে সাপাহারগামী বাসে দিবস দীঘিতে যাওয়া যায়। জনপ্রতি ভাড়া নেবে ৫০ টাকা।
কোথায় থাকবেনঃ নওগাঁ শহরে থাকার জন্য ভাল মানের বেশকিছু এসি, ননএসি আবাসিক হোটেল ও মোটেল আছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে—
মোটেল চিস্তিয়াঃ মোটেল চিস্তিয়া নওগাঁর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত। ভাড়া- এসি রুম ১ হাজার ৮শ থেকে ৫ হাজার টাকা। নন এসি রুম ৪শ ৮০ থেকে ১ হাজার। মোবাইল ফোন: ০১৭২০৫৪৪৪৪৫।
হোটেল অবকাশঃ হোটেল অবকাশ পার নওগাঁয় অবস্থিত। ভাড়া- এসি রুম ৪শ, নন এসি ৩শ। মোবাইল ফোন: ০১৭১১৫৮২১৬০।
হোটেল যমুনাঃ হোটেল যমুনা নওগাঁ লিটন ব্রিজের পাশে অবস্থিত। ভাড়া- ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। মোবাইল ফোন: ০১৭১৬২৮৪০০০।
হোটেল আরিফঃ হোটেল আরিফ নওগাঁর কাপড় পট্টিতে অবস্থিত। ভাড়া- ২শ থেকে ৩শ টাকা। মোবাইল ফোন: ০১৭৫৩৪২৭৬৮৫।
এছাড়া ঐতিহাসিক পাহাড়পুর ও পতিসর কুঠিবাড়ীতে সরকারি ডাক বাংলো রয়েছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে এসব ডাক বাংলোতেও থাকতে পারবেন।
পাহাড়পুর ডাক বাংলোঃ ভাড়া- সিঙ্গেল ৫শ থেকে ৭শ। ডাবল ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪শ টাকা। মোবাইল ফোন: ০১৭১১৩০১২৭৪ (কাস্টডিয়ান)
পতিসর ডাক বাংলোঃ ভাড়া- এসি রুম ৪শ, সাধারণ ৪০ টাকা। মোবাইল ফোনঃ ০১৭১৭১৫৪৬৯২ (কেয়ারটেকার)।
কীভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে সড়কপথে নওগাঁ যাওয়া বেশকিছু বাস রয়েছে। এগুলো হচ্ছে রোজিনা, হানিফ,শ্যামলী, এসআর, কেয়া ইত্যাদি।
বিখ্যাত খাবারের নাম নওগাঁর রসমালাই,নওগাঁর প্যারা সন্দেশ,মহাদেবপুর উপজেলার গরম গরম স্পন্জের মিস্টি।
নদী সমূহ আত্রাই, পুনর্ভবা, ছোট যমুনা, নাগর, চিরি
কোথায় থাকবেন : নওগাঁয় রয়েছে বেশকিছু আবাসিক হোটেল। রাজ হোটেল, তাজ হোটেল,পাঁচভাই হোটেল, স্মরণী হোটেল, যেখানে থাকতে পারবেন।
এখানে দেখতে পাবেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য পতিসর, ১৯২৩ সালে আবিষ্কৃত পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, গদ্দল মহাবিহার, পতœীতলায় অবস্থিত দিব্যক স্মৃতিস্তম্ভ, নসরত শাহ নির্মিত কুশুম্বা মসজিদ। এছাড়াও রয়েছে করোনেশন থিয়েটার,অনিমেষ লাহিড়ীর বাড়ি, পালবংশের স্মৃতি বহনকারী সাঁওতালপাড়া।
পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার: নওগাঁ থেকে ৩২ কিলো মিটার উত্তরে বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার। এর আদি নাম সোমপুর বিহার। ইতিহাসবিদদের মতে, পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা ধর্মপাল অষ্টম শতকের শেষের দিকে এ বিহার নির্মাণ করেছিলেন। বিহারের আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৯শ ২২ ফুট ও পূর্ব-পশ্চিমে ৯শ ১৯ ফুট। সমগ্র পৃথিবীতে এ পর্যন্ত জ্যামিতিক নকশার যতগুলো পুরাকীর্তির সন্ধান পাওয়া গেছে বিশেষজ্ঞদের মতে পাহাড়পুর তার মধ্যে অন্যতম সেরা। কারো কারো মতে এখানে একটি জৈন মন্দির ছিল। আর সেই মন্দিরের উপরেই গড়ে তোলা হয়েছে এ বিহার। এ বিহারে মোট ১৭৭টি ঘর রয়েছে। ঘরগুলোতে বৌদ্ধভিক্ষুরা বাস করতেন। বিহারের ঠিক মাঝখানে রয়েছে একটি মন্দির। মন্দিরটি দৈর্ঘ্যে ৪শ ফুট, প্রস্থে প্রায় ৩শ ৫০ ফুট ও উচ্চতায় ৭০ ফুট। কালের বিবর্তনে মন্দিরের সবচেয়ে উপরের অংশ ধসে গেছে। বাইরের দেয়ালে বুদ্ধমূর্তি, হিন্দুদের দেবী মূর্তি ও প্রচুর পোড়ামাটির ফলকচিত্র রয়েছে।
এসব চিত্রে সাধারণ মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবনগাথা চিত্রিত হয়েছে। বিহারের মূল বেষ্টনীর দেয়াল প্রায় ২০ ফুট চওড়া। বেষ্টনীর মধ্যে রয়েছে আরেকটি মন্দির। এটি মূল মন্দিরের ধ্বংস স্তূপ বলে ধারণা করা হয়। এ ছাড়াও এ বিহারের চারিপাশে আরো অনেক স্থাপত্যের নিদর্শন পরিলক্ষিত হয়। বিহারের কাছেই রয়েছে ইট ও পাথর দিয়ে বাঁধানো একটি ঘাট। এ ঘাটের পাশ দিয়ে এক সময় একটি নদী ছিল। এ ঘাট নিয়ে এলাকায় অনেক জনশ্রুতি রয়েছে। এ ঘাটে মইদল রাজার কন্যা সন্ধ্যাবতী স্নান করতো বলে এ ঘাটের নাম ছিল সন্ধ্যাবতীর ঘাট। নরওয়ে সরকারের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে ১৯৯৩ সালে এখানে একটি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়। এ জাদুঘরে খলিফা হারুন অর রশিদের শাসনামলের রুপার মুদ্রাসহ বিভিন্ন সময়ের প্রাচীন মুদ্রা, কয়েক হাজার পোড়ামাটির ফলকচিত্র, পাথরের মুর্তি, তাম্রলিপি, শিলালিপি ইত্যাদি স্থান পেয়েছে। বিহারের চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
নওগাঁ থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা: নওগাঁ থেকে বাসে ও অটোরিকশা রিজাভ করে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে যাওয়া যায়। বাসে জনপ্রতি ভাড়া ৩০ টাকা। নওগাঁ শহর থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা রিজাভ নিলে ভাড়া নেবে ৫শ টাকা। এতে ৫ জন যাওয়া যায়।
পতিসর কুঠিবাড়ী: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত পতিসর কুঠি বাড়ী। নওগাঁ শহর থেকে প্রায় ৩৬ কিলোমিটার দক্ষিণে আত্রাই উপজেলার নাগর নদের তীরে পতিসর কুঠিবাড়ী অবস্থিত। পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত কালিগ্রাম পরগনার জমিদারী দেখাশোনার জন্য কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৯১ সালে সর্বপ্রথম পতিসরে আসেন। জমিদারী দেখা-শোনার জন্য এলেও প্রকৃতি ও মানব প্রেমী কবি অবহেলিত পতিসর এলাকার মানুষের জন্য দাতব্য চিকিত্সালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠাসহ অনেক জনহিতৈষী কাজ করেন। এখানকার কৃষকের কল্যাণে নোবেল পুরস্কারের ১ লাখ ৮ হাজার টাকা দিয়ে তিনি এখানে একটি কৃষি ব্যাংক স্থাপন করেন। কবির সাহিত্য সৃষ্টির একটি বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে পতিসর। পতিসরে বসেই কবি চিত্রা, পূর্ণিমা, সন্ধ্যা,গোরা, ঘরে-বাইরেসহ অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেন। রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বুকে নিয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে পতিসর কুঠিবাড়ী।
নওগাঁ থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা: নওগাঁ থেকে সরাসরি পতিসরে বাস যায় না। আত্রাই অথবা রানীনগরে বাস থেকে নেমে অটোরিকশা অথবা রিকশা-ভ্যানযোগে পতিসর যাওয়া যায়। শহর থেকে মাইক্রোবাস অথবা অটোরিকশা রিজার্ভ নিয়েও প্রতিসর ঘুরে আসা যায়।
ঐতিহাসিক কুশুম্বা মসজিদ: সাড়ে চারশ বছরের ঐতিহ্য ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক কুশুম্বা মসজিদ। নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলা সদর থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণে নওগাঁ রাজশাহী মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত কুশুম্বা গ্রাম। এ গ্রামের বিশাল আকৃতির দীঘির পশ্চিম পাড়ে ধুসর বর্ণের ঐতিহাসিক কুশুম্বা মসজিদ অবস্থিত। বাংলায় নিযুক্ত আফগান শাসক গিয়াস উদ্দীন বাহাদুর শাহেব আমলে জনৈক সোলায়মান ১৫৫৮ খিস্টাব্দে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন।
মসজিদের চার কোণায় রয়েছে ৪টি মিনার,মিনারগুলো মসজিদের দেয়াল পর্যন্ত উঁচু ও আট কোণ বিশিষ্ট। ছাদের উপর রয়েছে মোট ৬টি গম্বুজ। মসজিদের উত্তর দিকের মেহরাবের সামনে পাথরের পিলারের ওপর তৈরি করা হয়েছিল একটি দোতলা ঘর। এই ঘরটিকে বলা হতো জেনান গ্যালারী বা মহিলাদের নামাজের ঘর। মসজিদের ভেতরে পশ্চিমের দেয়ালে রয়েছে ৩টি চমত্কার মেহরাবের ওপর ঝুলন্ত শিকল, ফুল ও লতা পাতার কারুকার্য। মসজিদের সম্মুখ ভাগে রয়েছে খোলা প্রাঙ্গণ ও পাথর বসানো সিঁড়ি যা দীঘিতে গিয়ে নেমেছে। বাংলাদেশের ৫ টাকা নোটে এ মসজিদটির ছবি রয়েছে। নওগাঁ থেকে সরাসরি রাজশাহীগামী বাসে কুশুম্বা মসজিদে যাওয়া যায়। জনপ্রতি ভাড়া নেবে ৩০ টাকা।
দিবর দীঘি: নওগাঁ জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিঃ মিটার ও পত্নীতলা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিঃ মিটার পশ্চিমে সাপাহার-পত্নীতলা সড়কের পাশে হাজার বছরের প্রাচীন এ দীঘিটি অবস্থিত। বৃহত্ এ দীঘি ও দীঘির চারপাশের সবুজ বৃক্ষরাজি মুগ্ধ করবে আপনাকে। নওগাঁ থেকে সাপাহারগামী বাসে দিবস দীঘিতে যাওয়া যায়। জনপ্রতি ভাড়া নেবে ৫০ টাকা।
কোথায় থাকবেনঃ নওগাঁ শহরে থাকার জন্য ভাল মানের বেশকিছু এসি, ননএসি আবাসিক হোটেল ও মোটেল আছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে—
মোটেল চিস্তিয়াঃ মোটেল চিস্তিয়া নওগাঁর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত। ভাড়া- এসি রুম ১ হাজার ৮শ থেকে ৫ হাজার টাকা। নন এসি রুম ৪শ ৮০ থেকে ১ হাজার। মোবাইল ফোন: ০১৭২০৫৪৪৪৪৫।
হোটেল অবকাশঃ হোটেল অবকাশ পার নওগাঁয় অবস্থিত। ভাড়া- এসি রুম ৪শ, নন এসি ৩শ। মোবাইল ফোন: ০১৭১১৫৮২১৬০।
হোটেল যমুনাঃ হোটেল যমুনা নওগাঁ লিটন ব্রিজের পাশে অবস্থিত। ভাড়া- ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। মোবাইল ফোন: ০১৭১৬২৮৪০০০।
হোটেল আরিফঃ হোটেল আরিফ নওগাঁর কাপড় পট্টিতে অবস্থিত। ভাড়া- ২শ থেকে ৩শ টাকা। মোবাইল ফোন: ০১৭৫৩৪২৭৬৮৫।
এছাড়া ঐতিহাসিক পাহাড়পুর ও পতিসর কুঠিবাড়ীতে সরকারি ডাক বাংলো রয়েছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে এসব ডাক বাংলোতেও থাকতে পারবেন।
পাহাড়পুর ডাক বাংলোঃ ভাড়া- সিঙ্গেল ৫শ থেকে ৭শ। ডাবল ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪শ টাকা। মোবাইল ফোন: ০১৭১১৩০১২৭৪ (কাস্টডিয়ান)
পতিসর ডাক বাংলোঃ ভাড়া- এসি রুম ৪শ, সাধারণ ৪০ টাকা। মোবাইল ফোনঃ ০১৭১৭১৫৪৬৯২ (কেয়ারটেকার)।
কীভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে সড়কপথে নওগাঁ যাওয়া বেশকিছু বাস রয়েছে। এগুলো হচ্ছে রোজিনা, হানিফ,শ্যামলী, এসআর, কেয়া ইত্যাদি।
বিখ্যাত খাবারের নাম নওগাঁর রসমালাই,নওগাঁর প্যারা সন্দেশ,মহাদেবপুর উপজেলার গরম গরম স্পন্জের মিস্টি।
নদী সমূহ আত্রাই, পুনর্ভবা, ছোট যমুনা, নাগর, চিরি
কোথায় থাকবেন : নওগাঁয় রয়েছে বেশকিছু আবাসিক হোটেল। রাজ হোটেল, তাজ হোটেল,পাঁচভাই হোটেল, স্মরণী হোটেল, যেখানে থাকতে পারবেন।
0 মন্তব্য(গুলি):
Post a Comment